QuranicPath logo
Quranic verse

Bengali Language

Turkish version

Arabic version

Indonesian version

French version

English version

সতর্ক বানীঃ

এই পেজ খৎনা প্রথার সত্যিকার কারণ উন্মোচন করে। এই পেজে সেই কারণে এমন তথ্য এবং ছবি আছে যা কেউ কেউ আপত্তিকর মনে করতে পারেন।


খৎনা – এটি কি কোরআন শরীফ অনুমোদন দেয় ?

জননেনি্দ্রয় অঙ্গচ্ছেদ

১। সুচনা

খৎনা (পুরুষ) কি?
খৎনা শব্দটির মানে “চতুর্দিকে কাটা”। ছেলে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে খৎনা হচ্ছে একটি অস্ত্রোপচার পদ্ধতি যার দ্বারা ছেলেদের যৌনাঙ্গের মাথার দিকের চামড়া কেটে সরিয়ে ফেলা হয়, যা উপরের অংশটিকে আবৃত করে রাখে। পুরুষ যৌনাঙ্গের এই চামড়া একটি জটিল ও সচল “ঢাকনা” যার কোথা থেকে কাটা সঠিক, খৎনা করার সময় সেটির কোনো নির্দিষ্ট মাপ নাই। এর অর্থ দাঁড়ায় কত টুকু চামড়া কাটা হবে একটি খৎনার সময় তা পুরোপুরি আলাদা হতে পারে আরেকটি খৎনা থেকে। কোনো দুইটি খৎনা কখনো এক রকম হয় না।

Baby penis being circumcisded

২। হযরত ইব্রাহীম (আ) ও খৎনাঃ

হযরত ইব্রাহীম (আ) এর খৎনা এর কথা পবিত্র কোরআন শরীফে নেই। কোরআন শরীফে হযরত ইব্রাহীম (আ) এর অনেক কাহিনী বর্ণনা করা আছে, উনার নামই উল্লেখ করা হয়েছে ৬৭ বার। অথচ কোরআন শরীফে হযরত ইব্রাহীম (আ) এর খৎনার ব্যাপারে কিছুই বলা নাই এবং কোথাও সরাসরি নির্দেশনাও দেওয়া নাই। আল্লাহ্‌ এর উপর হযরত ইব্রাহীম (আ) এর বিশ্বাস এবং নিষ্ঠার কথাই গুরুত্ব সহকারে বলা হয়েছে যা আমাদের জন্য অনুকরণীয়। হযরত ইব্রাহীম (আ) দ্বারা কাবা শরীফের নির্মাণ এবং অন্য সকল ব্যাপারে কোরআন শরীফে বর্ণনা করা হয়েছে – অথচ তাঁকে উনার গোপোনাঙ্গের একটি অংশ কেটে ফেলতে বলা হয়েছে সেটি কোথাও বলা হয় নাই। এর পিছনে গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ আছে যা আমরা অচিরেই দেখতে পারব।

Picture of Qur'an

"তারা বলে, তোমরা ইহুদী অথবা খ্রীষ্টান হয়ে যাও, তবেই সুপথ পাবে। আপনি বলুন, কখনই নয়; বরং আমরা ইব্রাহীমের ধর্মে আছি যাতে বক্রতা নেই। সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।" (আল-কুরআন ২:১৩৫)

আমরা হযরত ইব্রাহীম (আ) কে অনুসরণ করি যেটি পবিত্র কোরআন শরীফে বর্ণনা করা হয়েছে, বাইবেল এ যা বর্ণনা করা হয়েছে সেটি না, যেইখানে এই খৎনার কথা পাওয়া যায়। মহান আল্লাহ্‌ তাআলার শিক্ষা অবশ্যই বাইবেলের উপরে।

"আল্লাহ তোমাদের জন্যে সব কিছু পরিষ্কার বর্ণনা করে দিতে চান, তোমাদের পূর্ববর্তীদের পথ প্রদর্শন করতে চান। এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করতে চান, আল্লাহ মহাজ্ঞানী রহস্যবিদ।" (আল-কুরআন ৪:২৬)

৩। আল্লাহ্‌ বলেন, তিনি মানুষকে নিখুঁত করে বানিয়েছেনঃ

পবিত্র কোরআন শরীফের অসংখ্য যায়গায় বর্ণনা করা হয়েছে, মহান আল্লাহ্‌ তাআলা বলেছেন, তিনি মানুষ সহ সকল কিছু নিখুঁত ছাঁচে তৈরি করেছেন। মানুষের সৃষ্টি সম্পর্কে নিম্নোক্ত আয়াতে আল্লাহ্‌ সুস্পষ্ট করে বলেছেনঃ

"সুনিশ্চয় আমরা মানুষকে সৃষ্টি করেছি শ্রেষ্ঠ-সুন্দর আকৃতিতে।" (আল-কুরআন ৯৫:৪)

খেয়াল করুন, আল্লাহ্‌ ঘোষণা দিচ্ছেন তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ স্রষ্টা – যার অর্থ দাঁড়ায় একটি মানব শিশুর আকৃতি জন্মের সময়েই নিখুঁত থাকে।

"এরপর আমি শুক্রবিন্দুকে জমাট রক্তরূপে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর জমাট রক্তকে মাংসপিন্ডে পরিণত করেছি, এরপর সেই মাংসপিন্ড থেকে অস্থি সৃষ্টি করেছি, অতঃপর অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃত করেছি, অবশেষে তাকে নতুন রূপে দাঁড় করিয়েছি। নিপুণতম সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ কত কল্যাণময়। " (আল-কুরআন ২৩:১৪)

খেয়াল করুন, আল্লাহ্‌ ঘোষণা দিচ্ছেন তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ স্রষ্টা – যার অর্থ দাঁড়ায় একটি মানব শিশুর আকৃতি জন্মের সময়েই নিখুঁত থাকে।

অন্য একটি আয়াতে আল্লাহ্‌ বয়ান করেছেনঃ

"তুমি পর্বতমালাকে দেখে অচল মনে কর, অথচ সেদিন এগুলো মেঘমালার মত চলমান হবে। এটা আল্লাহর কারিগরী, যিনি সবকিছুকে করেছেন সুসংহত। তোমরা যা কিছু করছ, তিনি তা অবগত আছেন।" (আল-কুরআন ২৭:৮৮)

মানুষ সম্পর্কিত আরো তিনটি আয়াতে আল্লাহ্‌ বলেনঃ

Sunat

"যিনি তাঁর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে নিখুঁত ভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং কাদামাটি থেকে মানব সৃষ্টির সূচনা করেছেন।" (আল-কুরআন ৩২:৭)

"আল্লাহ, পৃথিবীকে করেছেন তোমাদের জন্যে বাসস্থান, আকাশকে করেছেন ছাদ এবং তিনি তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর তোমাদের আকৃতি উত্তম করেছেন এবং তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন পরিচ্ছন্ন রিযিক। তিনি আল্লাহ, তোমাদের পালনকর্তা। বিশ্বজগতের পালনকর্তা, আল্লাহ বরকতময়।" (আল-কুরআন ৪০:৬৪)

"তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর নিখুঁত করেছেন তোমাদের আকৃতি। তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তন।" ( আল-কুরআন ৬৪:৩)

উপরোক্ত সকল আয়াত আমাদেরকে বলে যে আল্লাহ্‌ নর ও নারী উভয়কেই মাতৃগর্ভে থাকাকালীনই নিখুঁত করে সৃষ্টি করেন। পুরুষের গোপনাঙ্গএর উপরের চামড়াটিও ইচ্ছাকৃত সৃষ্টি। মহান আল্লাহ্‌ তাআলা এই গোপনাঙ্গএর নকশায় কোনো “ভুল” করেন নাই। মানুষ ছুরি নিয়ে পুরুষের গোপনাঙ্গএর একটি অংশ কেটে ফেলুক, যেন নকশার কোনো ত্রুটি শোধরানো হচ্ছে, সেটির দরকার মহান আল্লাহ্‌ তাআলার নাই। তিনি বলেনঃ

"তিনি সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। তুমি করুণাময় আল্লাহ তা’আলার সৃষ্টিতে কোন ব্যতিক্রম দেখতে পাবে না। আবার দৃষ্টিফেরাও; কোন ফাটল দেখতে পাও কি?" (আল-কুরআন ৬৭:৩)

খৎনার সমর্থনকারীগণ বলেন এর পিছে সুস্বাস্থ্য, পরিচ্ছন্নতা এবং আরো উপকারীতা আছে। এটি মহান আল্লাহ্‌ তাআলাকে অপমান করার সামিল। তার কারণ, যদি পুরুষের গোপনাঙ্গএর উপরের এই ত্বক দরকার না হত, অথবা সেটি ছাড়াই “ভালো” হত, তাহলে আল্লাহ্‌ পুরুষ বাচ্চাদের এটি ছাড়াই সৃষ্টি করতেন – যেভাবে আল্লাহ্‌ বর্ণনা করেন – তিনি তাঁর সকল সৃষ্টিকে নিখুঁত করে তৈরি করেছেন। কোরআন শরীফের বর্ণনা মোতাবেক মেডিক্যাল গবেষণাতেও দেখা যায়, পুরুষের গোপনাঙ্গএর এই ত্বকের অনেক দরকারী এবং উপকারী কাজ আছে এবং এটি আল্লাহ্‌ তালার ইচ্ছাকৃত একটি নকশা।

৪। পুরুষের গোপনাঙ্গএর ত্বকের কার্যকারিতাঃ

Prepuce

নিম্নে পুরুষের গোপনাঙ্গএর ত্বকের কিছু কার্যকারিতা এবং তা কেটে ফেলে দিলে কি ঘটে তা বর্ণনা করা হল।

✔ বিশেষায়িত সংবেদনশীল ত্বক. এই ত্বকে হাজার হাজার কুণ্ডলিত সূক্ষ্ম রিসেপ্টর (Meissner’s corpuscles) থাকে যা পুরুষের গোপনাঙ্গএর সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল একটি অংশ। এছাড়াও এটি ডোরসাল নার্ভ (dorsal nerve) এর একটি অংশ বহন করে এবং ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ বিশেষায়িত বিভিন্ন রকম এরোটোজেনিক নার্ভ (erotogenic) এর শেষাংশও বহন করে, যা সামান্য নড়াচড়া বা প্রসারণ সনাক্ত করতে পারে। এমনকি তাপমাত্রার সামান্য পরিবর্তন বা ত্বকের সূক্ষ্ম পরিবর্তনও সনাক্ত করতে পারে। যে কারণে খৎনা করা হলে সর্বচ্চো ২০,০০০ নার্ভের শেষাংষ সরিয়ে ফেলা হয়। একটু খেয়াল করলে দেখবেন, পুরুষের গোপনাঙ্গএর সবচাইতে সংবেদনশীল অংশ হছে এই ত্বকের উপরিভাগ (transitional region from external to internal prepuce), যা খৎনা করার সময় কেটে ফেলা হচ্ছে।

✔ সুরক্ষা. পুরুষের গোপনাঙ্গএর ত্বকের এই অংশ সংবেদনশীল শিশ্নাগ্রকে ঢেকে রাখে এবং এটিকে ঘর্ষণ, শুকিয়ে যাওয়া, দাগ পড়া বা পারিপার্শ্বিক ময়লা ও দূষিত পদার্থ থেকে রক্ষা করে। এর ভিতরের অংশ নরম মুকসা তৈলাক্তকরণ স্তর (mucosa lubrication layer) দিয়ে তৈরি, আমাদের চোখের মনির চারিদিকের সাদা অংশের মত, যা সংবেদনশীল শিশ্নাগ্রকে রক্ষা করে ঘর্ষণ থেকে। শিশ্নাগ্র (যা উপরের চিত্রে দেখা যাচ্ছে খৎনার পরে) একটি সুরক্ষিত অভ্যন্তরীণ অংশ হিসাবেই তৈরি, নারীদের ভগাঙ্কুর এর মত। এটি খুবই সংবেদনশীল এবং সবচাইতে আর্দ্র মানুষের অভ্যন্তরীণ প্রত্যঙ্গ এর মাঝে। কিন্তু খৎনার পরে এটি তার সংবেদনশীলতা হারাতে শুরু করে ঘর্ষণ থেকে। প্রথম কিছু সপ্তাহে এটি এমনকি খুবি ব্যাথা করে সামান্য স্পর্শেও। মানুষের চোখ যেমন চোখের পাতা দিয়ে সুরক্ষিত থাকে, শিশ্নাগ্রও তেমনি। আমরা আমাদের চোখ কখনো সরাসরি স্পর্শ করি না, পাতা স্পর্শ করি। খৎনার পরে উন্মুক্ত শিশ্নাগ্র শুকিয়ে যেতে থাকে এবং বাইরের দিকে শক্ত একটি স্তর তৈরি করে পারিপার্শ্বিক ময়লা ও দূষিত পদার্থ থেকে রক্ষা পেতে।

5)  পরিচ্ছন্নতার জন্য কি খৎনা দরকার?

উপরে যেভাবে বলা হয়েছে, খৎনার সমর্থনকারীরা পরিচ্ছন্নতাকে একটি কারণ হিসাবে দেখায়। কিন্তু তারা এটি স্বীকার করতে চায় না যে শিশ্নাগ্রকে পরিষ্কার করা গোসলের সময় খুবই সাধারণ আর সহজ একটি কাজ, যা করতে দাঁত ব্রাশ করার থেকেও কম সময় লাগে! আমাদের নাক বাতাস থেকে ময়লা ফিল্টার করে এবং নিয়মিত পরিষ্কার করতে হয়, তাই বলে আমরা গিয়ে নাক কেটে ফেলে দেই না শুধুমাত্র এটি পরিষ্কার করতে হয় বলে। অথবা চিন্তা করি, মল ত্যাগের পর আমাদের মলদ্বার পরিষ্কার করতে হয় – সুতরাং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা জীবনযাপনের একটি অংশ, কেটে ফেলা কোন সমাধান নয়।

এছাড়াও খৎনার সমর্থনকারীরা বলে যে এটি “রোগ প্রতিরোধ করে”। কিন্তু পৃথিবীর মাত্র ২০% পুরুষ আছে খৎনা করা, বাকি ৮০% নাই। আমরা কি কোন মহামারী ছড়িয়ে পড়তে দেখছি? উত্তর হচ্ছে “না”।

৬। কোরআন শরীফে শয়তানের দৃঢ় অঙ্গিকার আল্লাহ্‌ তাআলার সৃষ্টিকে পরিবর্তনেরঃ

Circoncision

সৌজন্যে :   www.drmomma.org

শয়তান অঙ্গিকার করে মানুষকে তার শরীরের অংশ যা আল্লাহর সৃষ্টি সেটিকে ফেলে দিতে প্ররোচনা দেওয়ার।

"তাদেরকে পথভ্রষ্ট করব, তাদেরকে আশ্বাস দেব; তাদেরকে পশুদের কর্ণ ছেদন করতে বলব এবং তাদেরকে আল্লাহর সৃষ্ট আকৃতি পরিবর্তন করতে আদেশ দেব। যে কেউ আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, সে প্রকাশ্য ক্ষতিতে পতিত হয়। সে তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তাদেরকে আশ্বাস দেয়। শয়তান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়, তা সব প্রতারণা বৈ নয়।" (আল-কুরআন ৪:১১৮-১১৯)

Sunat যেমন দেখা যাচ্ছে, এটি শয়তানের অঙ্গিকার যে সে মানুষকে প্ররোচিতো করবে আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তন করার জন্য। শয়তান শুধু গরুর কানের কথা বলছে বলে এইটা বোঝায় না যে সে শুধুমাত্র এইটার কথাই বলছে। এর কারণ শয়তানের লক্ষ্যই হচ্ছে মানুষকে প্ররোচিতো করা আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তন করার জন্য – গরুর কান কেটে ফেলা এই লক্ষ্য পূরণের একটি পন্থা মাত্র, শয়তান অন্য পন্থাও অবলম্বন করতে পারে। আমরা তার এই কথা থেকেই তা জানতে পারি – “আমি তাদেরকে আদেশ দিব আর তারা আল্লাহর সৃষ্টি পরিবর্তন করবে”, যেখানে আল্লাহর সৃষ্টি বলতে যা কিছু আল্লাহ্‌ বানিয়েছেন, পুরুষ শিশুর গোপনাঙ্গ সহ, সবকিছুই বুঝায়।

ডানেঃ একটি বাচ্চার খৎনা করা হচ্ছে।

এই অঙ্গিকার করার পর, শয়তানকে রাস্তা বের করতে হবে মানুষকে এই কাজ করতে বাধ্য করার জন্য। শয়তান কিভাবে তার উদ্দেশ্য পূরণ করবে সে ব্যাপারে আল্লাহ্‌ বলেছেন যে, শয়তান উদ্বুদ্ধ করবে এমন সব কথা আর কাহিনী বলে যা কোরআন শরীফের বাইরের এবং সে এগুলোকে চালাবে শোনা কথা বা গল্প হিসাবে।

"এমনিভাবে আমি প্রত্যেক নবীর জন্যে শত্রু করেছি শয়তান, মানব ও জিনকে। তারা ধোঁকা দেয়ার জন্যে একে অপরকে কারুকার্যখচিত কথাবার্তা শিক্ষা দেয়। যদি আপনার পালনকর্তা চাইতেন, তবে তারা এ কাজ করত না।" (আল-কুরআন ৬:১১২)

পবিত্র কোরআন শরীফই হচ্ছে একমাত্র দিক নির্দেশক বিশ্বাসীদের জন্য। কৌতূহলোদ্দীপক একটি ব্যাপার দেখুন, সুন্নী হাদিস বইয়ে খৎনা বিষয়ক যত হাদিস আছে যা হযরত মুহাম্মদ (সা) থেকে বর্ণিত হয়েছে বলে বলা হয়, তার কোথাও পুরুষ ও নারীর খৎনার ব্যাপারে পার্থক্য করা হয় নাই। বরং এমন হাদিস পাওয়া যায় যেখানে নারীদের খৎনার কথাও বলা হয়েছে। এই সকল হাদিসের উপর ভিত্তি করে অনেক তথাকথিত আলেম রায় দেন যে নারীদের জন্যও খৎনা বাধ্যতামূলক। অন্য কিছু কারণে পুরুষদের খৎনার প্রচলন অনেক বেশী ছড়িয়েছে নারীদের তুলনায় যেখানে নারী ও পুরুষ উভয়ের খৎনাই সমান ভাবে বলা হয়েছে বলে দেখা যায়। নারীদের খৎনার এই প্রথা আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়শিয়ার অনেক জায়গায় দেখা যায় আজকে এই সকল কোরআন বিচ্যুত শিক্ষার প্রচারকারী এই সকল তথাকথিত আলেমদের জন্য। এই সকল কোরআন বিরোধী শিক্ষা (নারী ও পুরুষের এই খৎনা) যা মহানবী (সা) থেকে বর্ণিত বলে বলা হয়ে থাকে, বাস্তবে মোটেও মহানবী (সা) দ্বারা বর্ণিত নয় (দেখুন Understanding "Obey Allah & the Messenger")।

We have created man in the best of mould. (আল-কুরআন 95:4)

৭। খৎনাকৃত অনেক পুরুষ কেন অভি্যোগ করে না?

এর পিছনে একাধিক কারণ আছেঃ

১) তাদেরকে জন্মের পরেই খৎনা করে দেওয়া হয়েছিল। যৌন মিলন হয়ত তাদের কাছে আনন্দদায়ক লাগে এর পরেও, কিন্তু তারা পার্থক্য বোঝারই ক্ষমতা রাখে না যেহেতু তারা জানেই না আল্লাহ্‌ প্রদত্ত সম্পূর্ণ প্রত্যঙ্গ এবং তার ব্যাবহারে কেমন অনুভূত হতে পারে। যেই কারণে পার্থক্য বোঝারই উপায় নাই কোন তাদের। আজীবনব্যাপী অনুভূত অন্য অস্বস্তিগুলো যেমন শিশ্নাগ্রতে ঘর্ষণজনিত ব্যাথা এসব তাদের মস্তিষ্ক চাপা দিয়ে দেয় সময়ের সাথে সাথে (যদিও সেইসব অস্বস্তি অনুভূত ঠিকই হয়)।

২) তাদের বিশ্বাস যে এটি ইসলাম এর অংশ এবং কোন প্রশ্ন ব্যতিত তা মানতে হবে যেহেতু সত্যিকারের ধর্ম কখনো খারাপ নির্দেশ দিতে পারে না, “ইসলাম”ই সত্য যদিও তারা কোরআন শরীফে কি বলা আছে ধর্মের ব্যাপারে সেটাই জানে না (বাস্তবে, মহানবী (সা) কোরআন শরীফের শিক্ষার বিপরীত কোন কিছুই কখনো আদেশ করেন নাই)।

Baby শেষে বলা যায়, কোরআন শরীফ হতে প্রাপ্ত প্রমান এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান প্রমান করে যে পুরুষদের খৎনা আল্লাহ্‌ তাআলার ধর্ম ও আদেশের বিপরীত একটি প্রথা, বরং এটি শয়তান প্রভাবিত। এটি পুরুষের জন্য যেমন আজীবনের অসুবিধা সৃষ্টি করে তেমনি তার ভবিষ্যত স্ত্রীকেও দাম্পত্য জীবনের ক্ষতি করে। আপনার শিশু সন্তানের খৎনা করতে যাওয়ার আগে নিজেকে একবার জিজ্ঞেস করুন, মহান আল্লাহ্‌ তাআলার সৃষ্ট নিখুঁত এই সৃষ্টিকে পরিবর্তন করার অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে? ছেলে শিশুরা আল্লাহ্‌ যেভাবে তৈরি করেছেন ঠিক সেই আকৃতিতেই নিখুঁত।

"যিনি তাঁর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে নিখুঁত ভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং কাদামাটি থেকে মানব সৃষ্টির সূচনা করেছেন।" (কুরআন ৩২:৭)

"তুমি পর্বতমালাকে দেখে অচল মনে কর, অথচ সেদিন এগুলো মেঘমালার মত চলমান হবে। এটা আল্লাহর কারিগরী, যিনি সবকিছুকে করেছেন সুসংহত। তোমরা যা কিছু করছ, তিনি তা অবগত আছেন।" (আল-কুরআন ২৭:৮৮)

"যখন সব কাজের ফায়সলা হয়ে যাবে, তখন শয়তান বলবেঃ নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে সত্য ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং আমি তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছি, অতঃপর তা ভঙ্গ করেছি। তোমাদের উপর তো আমার কোন ক্ষমতা ছিল না, কিন্তু এতটুকু যে, আমি তোমাদেরকে ডেকেছি, অতঃপর তোমরা আমার কথা মেনে নিয়েছ। অতএব তোমরা আমাকে ভৎর্সনা করো না এবং নিজেদেরকেই ভৎর্সনা কর। আমি তোমাদের উদ্ধারে সাহায্যকারী নই। এবং তোমরাও আমার উদ্ধারে সাহায্যকারী নও। ইতোপূর্বে তোমরা আমাকে যে আল্লাহর শরীক করেছিলে, আমি তা অস্বীকার করি। নিশ্চয় যারা জালেম তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।" (আল-কুরআন ১৪:২২)

নিমন্ত্রণের কার্ড

Misconceptions link